রাজীব: ঢালিউডের খলনায়ক, বাস্তবে সাদামাটা, হাস্যোজ্জ্বল মানুষ

রাজীব: ঢালিউডের খলনায়ক, বাস্তবে সাদামাটা, হাস্যোজ্জ্বল মানুষ

আজ থেকে ২০ বছর আগে থেমে গিয়েছিল ঢাকাই সিনেমার গম্ভীর কণ্ঠ, রহস্যময় চাহনি আর বৈচিত্র্যময় অভিব্যক্তির অধিকারী খল অভিনেতা রাজীব। তাঁর আসল নাম ছিল ওয়াসীমুল বারী রাজীব। ২০০৪ সালের ১৪ নভেম্বর, মাত্র ৫২ বছর বয়সে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে পরপারে পাড়ি দেন এই খ্যাতিমান অভিনেতা। আজ তাঁর মৃত্যুর দুই দশক পূর্ণ হলো। তবে, পর্দার খলনায়ক রাজীবকে বাস্তব জীবনে কেমন ছিলেন?

খল চরিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি রাজীব ছিলেন একজন সাদামাটা, হাস্যোজ্জ্বল এবং আড্ডাবাজ মানুষ। পরিবারের সদস্য, সহকর্মী এবং ভক্তদের কাছে তিনি ছিলেন মিশুক। যদিও পর্দায় তার চরিত্রগুলো ছিল ভয়ঙ্কর, বাস্তবে তিনি ছিলেন একেবারে উল্টো। তাঁর সন্তানেরা জানিয়েছিলেন, ‘বাবা কখনো চলচ্চিত্রের কথা বাসায় তেমন বলতেন না। তার পারিবারিক জীবন ও চলচ্চিত্রজগৎ ছিল একেবারে আলাদা। তিনি ছিলেন খোলামনের এবং সাদামাটা মানুষ।’

রাজীবের জীবন সঙ্গী ছিলেন মার্শাল আর্টের ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলমের চাচাতো বোন ইসমত আরা। জাহাঙ্গীর আলম এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘সিনেমার চরিত্রগুলোর থেকে রাজীব ছিলেন একেবারে বিপরীত। শুটিং সেটে কখনোই উচ্চস্বরে কথা বলতেন না, বা চড়া মেজাজে আচরণ করতেন না।’

১৯৮২ সালে কাজী হায়াতের ‘খোকন সোনা’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন রাজীব। তারপর প্রায় দুই দশক ধরে তিনি চার শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেন। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে— *দাঙ্গা*, *হাঙর নদী গ্রেনেড*, *ভাত দে*, *জীবন দিয়ে ভালোবাসি*, *স্বপ্নের ঠিকানা*, *প্রেম পিয়াসী*, *বুকের ভেতর আগুন*, *অন্তরে অন্তরে*, *বাবার আদেশ*, *কেয়ামত থেকে কেয়ামত* এবং আরও অনেক।

রাজীবের সবচেয়ে বড় গুণ ছিল, যে চরিত্রে তিনি অভিনয় করতেন, সেটিতে নিজের অমর ছাপ রেখে যাওয়া। যদিও কিছু চরিত্রে গভীরতা ছিল কম বা সেগুলোর লেখাও তেমন শক্তিশালী ছিল না, তবুও নিজের অভিনয় দক্ষতার মাধ্যমে তিনি সেই চরিত্রগুলিকে পরিপূর্ণ করে তুলতেন।

দুঃখজনক যে, মাত্র ৫২ বছর বয়সে তিনি আমাদের ছেড়ে গেছেন। তবে, যদি আরও কিছু সময় পেতেন, তবে দর্শক পেতেন আরও অনেক বৈচিত্র্যময় চরিত্রে তাঁর দুর্দান্ত অভিনয়।

সর্বশেষ সংবাদ