শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা: ইন্টারপোলের মাধ্যমে ফেরত আনার পরিকল্পনা

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা: ইন্টারপোলের মাধ্যমে ফেরত আনার পরিকল্পনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণ আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি ভারতে অবস্থান করছেন। তার পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে গত ১০ নভেম্বর আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানান, জুলাই-আগস্ট মাসে গণহত্যা চালিয়ে যারা পালিয়ে গেছেন, তাদের ধরতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিস জারি করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, "যারা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে, তাদের গ্রেফতার করে দেশে ফিরিয়ে আনতে আমরা সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেব।"

এখন পর্যন্ত কোনো সরকারিভাবে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি যে শেখ হাসিনা কখনো ভারতে ছাড়বেন। তবে, আসিফ নজরুল তার বক্তব্যে ছাত্র আন্দোলনকালীন সময়ের পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করেছেন, যদিও সরাসরি হাসিনার নাম বলেননি। ৫ আগস্টের পর হাসিনা ভারত পালানোর সময় ছোট বোন রেহেনাকে নিয়ে তিনি ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন, এবং ভারত সরকার তাকে 'নিরাপত্তাজনিত কারণে' সেখানে থাকার অনুমতি দেয়।

এতদিন পর, ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিস জারি করা হলে, এটি একটি আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ হিসেবে ধরা হবে। এর মাধ্যমে ইন্টারপোলের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সতর্ক করা হবে। ইন্টারপোলের বিভিন্ন ধরনের নোটিস রয়েছে, যার মধ্যে রেড কর্নার নোটিস হল পলাতক অপরাধীদের গ্রেফতার করার জন্য জারি করা হয়। এর ফলে ভারতও এমন নোটিসের কারণে চাপে পড়ে হাসিনাকে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হতে পারে।

হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পর, তার বিরুদ্ধে দেশে শতাধিক হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। বিশেষ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সাইদুর রহমান হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনা-সহ ১৪৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। সব মিলিয়ে, তার বিরুদ্ধে অন্তত ২৩৩টি ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়েছে, যার মধ্যে ১৯৮টি মামলায় খুনের অভিযোগ রয়েছে। এর আগে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল এবং গত ১৭ অক্টোবর এটি আবারও জারি করা হয়।

অক্টোবর মাসের শেষ দিকে, এই দেশ-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস তার সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আপাতত হাসিনাকে ফেরত আনার কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি বলেন, "হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতা-বিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। আদালতের রায় আসলে আমরা ভারত সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করে তাকে ফেরত আনার চেষ্টা করব।"

এছাড়া, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আগামী ১৮ নভেম্বর হাসিনা-সহ সকল অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ